আঞ্জুমন আরা
জমিদারের একমাত্র ছেলে হীরা। ছেলেটি বাজে স্বভাবের ও বদ মেজাজি ছিল। জমিদার তার অযোগ্য ছেলের কর্মকাণ্ডে বিরক্ত হয়ে একসময় এক কঠিন সিদ্ধান্ত নিলেন। তার অর্জিত ধন সম্পদ তিনটি ঘড়ায় ভরে প্রাসাদের পেছনে নির্জন জায়গায় মাটির নীচে লুকিয়ে রাখলেন। নির্দিষ্ট জয়গাটি চিহ্নিত করার জন্য তার উপরে একটি বৃক্ষ চারা রোপন করলেন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জমিদারের চিন্তাশক্তি ও শাসন ক্ষমতা লোপ পেলো। এক সময় তিনি মারা গেলেন। ছেলে হীরার অলসতা ও অযোগ্যতার কারণে ধীরে ধীরে বাবার জমিদারি হাত ছাড়া হতে লাগলো। কিছুদিন যেতে না যেতে বসতভিটাসহ বাকি সব সম্পত্তি কিনে নিলেন এক ধনী ব্যাক্তি। এবং তিনি হলেন নতুন জমিদার। আর জমিদার পুত্র হীরা বসে বসে খেয়ে দরিদ্র দিন মজুরে পরিণত হলো। যারা এ জমিদারি কিনেছেন তারাই তাকে ডেকে কাজ করাতেন। দিন যায় মাস যায় । ধীরে ধীরে জমিদার পুত্র হীরার ও বয়স বাড়তে থাকে। আর তার বাবার হাতে লাগানো সেই বৃক্ষ এখন মহিরূহে পরিণত হয়েছে। নতুন জমিদার কন্যার বিয়ে ঠিক হলো। তাই লাকড়ির জন্য বড় গাছটি কাটার চিন্তা করলেন তিনি। অমনি ডাক পরলো দরিদ্র শ্রমিক হীরার। পরদিন সকালবেলা দুটো পান্তা খেয়ে কাধে কুঠার নিয়ে জমিদারের বাড়িতে আসলো পুরোনো জমিদার পুত্র হিরা। বিসমিল্লাহ বলে যখন গাছে কোপ মারলো তার পর আর বেশি দিন লাগলো না গাছ কেটে শেষ করতে। গাছ পরিণত হলো লাকড়িতে। জমিদারকে সমস্ত কাঠ ডাল পালা বুঝিয়ে দিয়ে বাড়ি গেলো হীরা। বৌ তাকে প্রশ্ন করলো, হ্যাগো জমিদার কি গাছের মূড়াটাও (গাছের শিকড়) নিয়েছে?
হীরা বললো, কিযে বলো? ভালো লাকড়িতেই তো বাড়ি ভরে গেছে, মূড়া দিয়া কি করবে সে ?
তাহলে ওটা কেটে আনো। কিছুদিন অন্তত শান্তিতে রান্না করতে পারব। আমার আর লাকড়ি কুড়াতে ভালো লাগে না।
পরদিন সকালে হীরা জমিদারের কাছে গিয়ে বৌয়ের কথাটা জানালো। জমিদার আর অমত করলেন না। মনে মনে ভাবলেন,
জঞ্জাল সরিয়ে ফেলাই ভালো। তাছাড়া গাছটি তো ওর বাবারই লাগানো।
যেমন বলা তেমন কাজ। হীরা রোজ গাছের শিকড়ের কিছু কিছু করে কাটতে লাগলো আর টুকরি ভরে বাড়ি নিয়ে যেতে লাগলো। এতো বড় গাছের শিকড় কাটা চারটেখানি কথা নয়। কারণ গাছের চেয়ে শিকড় শক্ত। হীরার শক্তিতে আর কুলিয়ে উঠছে না তাই বাড়ি গিয়ে বৌকে বকা ঝকা দিতে লাগলো। বৌ ও পাল্টা জবাব দিল।
তুমি যদি সব কিছু পারতে, তাহলে কি আর জমিদারি হাতছাড়া হয়। আজ তোমার কষ্ট তুমি নিজেই ডেকে এনেছো। এখন তো কষ্ট করতেই হবে। যাও বাকিটুকুও কেটে আনো অনেক দিন রান্না করতে পারব।
অগত্যা কি আর করা? হীরা আবার গেল গাছের শিকড় কাটতে। আজ পুরোনো দিনের কথা মনে করে হীরার চোখের জল টপ টপ করে মাটিতে পরতে লাগলো। শিকড় কাটতে কাটতে তার প্রচণ্ড পিপাসা পেল। সে অন্য একটি গাছের নিচে বসে বিশ্রাম নিতে গিয়ে অনেক কাঁদলো। মনের কষ্টে দীর্ঘশ্বাস ফেলতে ফেলতে আবার কুড়ালখানা হাতে নিয়ে মাটির গভীড়ে চলে যাওয়া শিকড়ে কোপ মারলো
কিন্তু একি? ঝন করে আওয়াজ হলো কেন?
কাঠে কোপ লাগার শব্দ তো এটা নয় ! তারপর কুড়াল রেখে হাত দিয়ে মাটি সরাতে লাগলো সে।
এবার দরিদ্র হীরার চোখ ছানাবড়া। একে একে বেরিয়ে এলো তিনটি মাটির ঘড়া। ঘড়ার ঢাকনা খোলার পর সে যা দেখলো তা আর কাউকে বলা যাবে না। সব মাটি চাপা দিয়ে দিলো। এরই মধ্যে সন্ধে ঘনিয়ে এলে হীরা মোহর ভর্তি ঘড়া অনেক যত্নে তুলে আনলো । এবার মাথার গামছা বিছিয়ে দিয়ে খুব সাবধানে টুকরিতে মোহরগুলো রেখে তার উপরে শেকড়ের ছোট ছোট টুকরা ভরে নিলো। কারো বোঝার সাধ্যটি নেই হীরার মাথায় কি আছে। বাবার লুকিয়ে রাখা সোনার মোহর তার কাছে আবার ফিরে এলো। এগুলো বিক্রি করে হীরা ধনী হয়ে গেলো । এবং সে আবারও জমিদার হলো। সেই থেকে হীরার আর কোনো অভাব রইলো না। হীরার বৌ বললো
জীবনে অনেক ভুল করেছো আর নয়।
হীরা খুব ভালো করে বুঝতে পারলো অবহেলা ও অলসতায় ক্ষমতা হারালে কতটা দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
শেখ একেএম জাকারিয়া
হেমন্ত এলেই মনে পড়ে সুফিয়া কামালের হেমন্ত নামের চিরসবুজ সেই কবিতার কথা, ‘সবুজ
আবু সাইদ
দিগন্তজোড়া ওই ফসলের মাঠে, ভেজা পায়ে হেলেদুলে হিমবুড়ি হাঁটে। ছেয়ে গেছে রঙে রঙে হলুদিয়া ধান, পুলকিত
কাজী মারুফ
শরৎ ঋতুর পরে দেশে হেমন্তকাল আসছে দূর্বাঘাসে শিশিরকণা মিটমিটিয়ে হাসছে। ফুলবাগানে হরেকরকম সুগন্ধি ফুল ফুটছে ভ্রমর এসে
আহসান খয়ের
সবুজ মাঠে হলদে রাঙ্গা প্রলেপ দেখা যায়, কোন সে কারু আঁকছে এমন ছবি আমার গাঁয়। কোন
মাহাথির মোবারক
হেমন্ত আজ দুয়ার খুলেছে সবুজ শ্যামল মাটে হেমন্ত আজ ডানা মেলছে শান্ত নদীর ঘাটে। হেমন্ত আজ
রবীন্দ্রনাথ অধিকারী
মতিঝিলের ঝিলে নয় বৌ-টুগানির বিলে আমার এ মন বান্ধা আছে ধান কাউনের নীলে ধান কাউন আর
সামিমা বেগম
ঋতুর রানি বিদায় নিয়ে আসছে আবার হেমন্ত, শিশিরভেজা ধানের ছবি মনমাতানো এমন তো। চতুর্দিকে শ্বেতকুয়াশা সকাল-সাঁঝে ভাসেতো, নজরকাড়া
চান মিয়া চান্দু
হেমন্তের রাতের আকাশ ঝিলিমিলি তারা এই হেমন্তে মন খারাপ করে আছে কারা এই হেমন্তে নদীর পারে সাগর
রফিকুল ইসলাম
হেমন্ত এসেছে... শরতের সাদা কাশফুল ঝরিয়ে শিশিরে ভেজা দুর্বাঘাস মাড়িয়ে বার্তাবাহক আগামী শীতের বার্তা নিয়ে। হেমন্ত
নূর নাহার নিপা
গাঁয়ের মাঠে সোনালী ধান সোনা রঙে হাসে খুশির ঝিলিক চাষির মুখে আবীর হয়ে
হামীম রায়হান
হেমন্ত তো এলো তুমি এলে না, শিউলির মালা ঝরে ক্ষণে ক্ষণে, কুয়াশার পরশে মন
সালাম হাসেমী
হেমন্ত এলো বাংলার বুকে খুশির খবর নিয়ে, কৃষাণের হিয়া দিয়েছে যে ভরে মাঠে পাকা ধান