থাইল্যান্ডে নির্বিচার গুলি
থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় একটি শহরে গত শনিবার এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে কমপক্ষে ২৭ জনকে হত্যা এবং আরও ৫৭ জনকে আহত করা সেনা কর্মকর্তা গুলিতে নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৩ বছরের একটি কিশোরও রয়েছে। হত্যাকারী ওই সেনা কর্মকর্তার নাম জাক্রাফ্যান থম্মা। তার বয়স ৩২ বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর মধ্য দিয়ে জনাকীর্ণ একটি বিপণিবিতানে চলা অচলাবস্থার অবসান হয়েছে গতকাল রোববার বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান ওচা। একটি জমি চুক্তি নিয়ে অসন্তোষ থেকে ওই সেনা কর্মকর্তা এ হতাহতের ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। রয়টার্স।
এক প্রতিবেদনে সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, শনিবার স্থানীয় সময় বেলা প্রায় ৩টার দিকে রাজধানী ব্যাংককের ২৫০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বের নাখন রাচসিমা (কোরাত নামেও পরিচিত) শহরের একটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছিল উন্মত্ত ওই সৈন্য। স্থানীয় পুলিশের ভাষ্য মতে, জাক্রাফ্যান থম্মা নামে সেনাবাহিনীর এ কনিষ্ঠ কর্মকর্তা প্রথমে শহরের একটি বাড়িতে ঢুকে দু’জনকে গুলি করে হত্যা করেন। এরপর তিনি সেনা ঘাঁটিতে যান। সেখানকার অস্ত্রাগার থেকে বন্দুক নিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো শুরু করেন। তার গুলির মুখে পড়েন পথচারী, বিপণিবিতানে কেনাকাটা করতে যাওয়া নারী-পুরুষও। হামলা শুরুর ১০ ঘণ্টা পরেও তাকে ধরতে শহরের কেন্দ্রস্থলের টার্মিনাল ২১ নামের বিপণিবিতানটি ঘিরে রাখেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এরমধ্যে একবার ওই বিপণিবিতানে অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী, তখন সেখানে আটকা পড়া কয়েকশ’ মানুষ বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। এরপরেও অস্ত্রধারী ওই বিপণিবিতানে অবস্থান করছিলেন বলে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কংচিপ তন্ত্রভানিত রয়টার্সকে জানান।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বিবিসি থাইকে জানান, এ সেনা সদস্য সেনা ঘাঁটি থেকে বন্দুক ও গুলি নেয়ার আগে তার কমান্ডিং অফিসারের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করেন। এরপর গাড়ি চালিয়ে শহরের কেন্দ্রস্থলের ওই বিপণিবিতানে যান। তার গুলিতে কমপক্ষে ২০ জন নিহত এবং কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল কংচিপ নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে রোববার নাখন রাচসিমার কয়েকটি হাসপাতালে ওই ঘটনায় আহতদের দেখতে যান দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান ওচা। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বাড়ি চুক্তি নিয়ে সৃষ্ট ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে ঘটনাটি ঘটেছে।’ ওই সেনা কর্মকর্তার কমান্ডিং অফিসারের এক আত্মীয়ের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব ছিল বলে এ সময় জানান প্রায়ুথ।
থাইল্যান্ডের গণমাধ্যম থাম্মাকে অব্যর্থ লক্ষ্যভেদী ও বন্দুকের বিষয়ে উৎসাহী ব্যক্তি বলে উল্লেখ করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই অস্ত্র নিয়ে তোলা ছবি পোস্ট করতেন তিনি।
হামলার আগেরদিন থাম্মা তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লোভী মানুষদের নিন্দা করে পোস্ট দেন। ‘প্রতারণার মাধ্যমে ধনী হওয়া। অন্য লোকদের থেকে সুবিধা নেয়া। তারা কী ভেবেছে নরকে এ টাকা খরচ করতে পারবেন?’ থাই ভাষায় লেখা এক পোস্টে সে এমন মন্তব্য করেছিল বলে জানিয়েছে রয়টার্স। পরে হামলা চলাকালে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়ার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন আপডেট দেয় সে। নির্বিচার হত্যাকা- চালানোর সময় লেখে সে- ‘সবার জন্যই মৃত্যু অবশ্যাম্ভাবী’। এর কয়েক ঘণ্টা পর ফেসবুক জানায়, সন্দেহভাজন হামলাকারীর অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে তারা।
অপরদিকে নির্বিচার গুলিবর্ষণকারী ওই সৈন্যকে নিরাপত্তা বাহিনী হত্যা করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আনুতিন চারনভিরাকুল। এক ফেসবুক বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘ঘটনা শেষ করায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ। গুলিবর্ষণকারী গুলিতে নিহত!!!’। ওই এলাকার চারটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আহত ব্যক্তিদের বাঁচাতে রক্ত চেয়ে ফেসবুকে পোস্টও দেন তিনি।
স্থানীয় গণমাধ্যমে সম্প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, ওই সেনা সদস্য শহরের মুয়াং এলাকায় টার্মিনাল ২১ বিপণিবিতানের সামনে একটি গাড়ি থেকে নেমে গুলি করছেন আর লোকজন পালানোর চেষ্টা করছেন। অপর একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রক্তে ভেসে যাওয়া গাড়ির চাকার ওপর পড়ে যাচ্ছেন একজন। তিনি নিহত ২০ জনের একজন কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আরেকটি ভিডিওতে গুলিবিদ্ধ চারজনকে দেখা গেছে, যাদের কোন সাড়া নেই।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা বিপণিবিতানের ভেতরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে বন্দুকধারীকে কালো পোশাক পরিহিত এবং কাঁধের ওপর বন্দুক উঁচু করে ধরে রাখতে দেখা গেছে। তার আশপাশে আর কারও উপস্থিতি দেখা যায়নি। তার গুলিতে নিহত অধিকাংশই এই বিপণিবিতানে মারা গেছেন। বিপণিবিতানটিতেই তাকে অবরুদ্ধ করে থাই নিরাপত্তা বাহিনী। এ সময় বিপণিবিতানের ভেতরে কয়েকজনকে জিম্মি করে সে। এভাবে সারা রাত ধরে অচলাবস্থা চলে। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর রোববার সকালে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে ঘাতকে পরিণত হওয়া এ সৈন্য নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন।
করোনাভাইরাস
চীনে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১১-তে। এছাড়া
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে দেশটির সেনাবাহিনীর পোশাক পরা এক ব্যক্তির মেশিনগানের গুলিতে দুই মার্কিন
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এমন প্রেক্ষাপটে এ ভাইরাসটির নতুন নাম ঘোষণা
দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন
গত শনিবার অনুষ্ঠিত দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে অরবিন্দ কেজরিওয়াল আবারও রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন-
সিরিয়ার ইদলিবে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে তুরস্ক। সিরীয় বিদ্রোহীদের শেষ ঘাঁটি হিসেবে এ
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) প্রতিবাদে নিজ দল থেকে পদত্যাগ করেছেন ভারতের মধ্যপ্রদেশের